যে টাকার জন্য মানুষ এত উৎসুক এক পলক দেখুন হয়তো দুধের স্বাধ ঘোলে মিটতে পারে



ভাইয়েরা সবাইকে পবিএ  ঈদের শুভেচ্ছা , ঈদের  দিন ছোটদের সেলামী দেওয়ার রেওয়াজ বহু যুগ ধরে , আর সেটা যদি হয় নতুন নোট তাহলে ছোটদের খুশির  অন্ত থাকে না ।  তাই সবাই চেস্টা করেন নতুন নোট সংগ্রহ করতে । আমিও তার ব্যতিক্রম নই তাইতো ছুটে গিয়ে ছিলাম বাংলাদেশ ব্যাংক এ , আর যা আভিজ্ঞতা হলো সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।  তাই দুধের সাধ ঘোলে মিটানোর এই প্রয়াশ ।

একটি দুই টাকার নোট এর বৈশিস্ট :

 
  • ১. অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক স্বাক্ষরিত এ নোটের সাইজ ১০০ × ৬০ মিলিমিটার।
  • ২. নোটটি সিনথেটিক ফাইবার মিশ্রিত অধিক টেকসই কাগজে মুদ্রিত।
  • ৩. কাগজে জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি; প্রতিকৃতির নিচে অতি উজ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে 2 লেখা আছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির বামপাশের উপরের দিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উজ্বলতর ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপ রয়েছে।
  • ৪. নোটে ২ মিলিমিটার চওড়া এমবেডেড্ নিরাপত্তা সুতা ব্যবহার করা হয়েছে। সুতাটি কাগজের ভিতরে অবস্থিত। আলোর বিপরীতে উভয় পিঠ হতে সুতাটি দেখা যাবে।
  • ৫. নোটের সামনের দিকে বাম পাশে লাইন প্যাটার্ন এর সাথে সরু রেখাটি অতি সুক্ষমভাবে BANGLADESH BANK শব্দদ্বয় পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। যা শুধু আতশী কাঁচ (Magnifying Glass) দ্বারা দেখা যাবে।
  • ৬. নোটের সামনের দিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং পটভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ডে জাতীয় স্মৃতি সৌধ হালকা রংয়ে মুদ্রিত রয়েছে।
  • ৭. নোটের পিছনের দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি মুদ্রিত আছে।

একটি ৫ টাকার নোট এর বৈশিস্ট :

        
  • ১. গভর্নর আতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এ নোটের সাইজ ১১৭ × ৬০ মিলিমিটার।
  • ২. নোটটি সিনথেটিক ফাইবার মিশ্রিত অধিক টেকসই কাগজে মুদ্রিত।
  • ৩. কাগজে জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি; প্রতিকৃতির নিচে অতি উজ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে 5 লেখা আছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির বামপাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের উজ্বলতর ইলেক্ট্রোটাইপ  জলছাপ রয়েছে।
  • ৪. নোটে ২ মিলিমিটার চওড়া এমবেডেড্ নিরাপত্তা সুতা ব্যবহার করা হয়েছে। সুতাটি কাগজের ভিতরে অবস্থিত। আলোর বিপরীতে উভয় পিঠ হতে সুতাটি দেখা যাবে।
  • ৫. নোটের সামনের দিকে বাম পাশে লাইন প্যাটার্ন এর সাথে সরু রেখাটি অতি সুক্ষমভাবে BANGLADESH BANK শব্দদ্বয় পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। যা শুধু আঁতশী কাঁচ (Magnifying Glass) দ্বারা দেখা যাবে।
  • ৬. নোটের সামনের দিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং পটভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ডে জাতীয় স্মৃতি সৌধ হালকা রংয়ে মুদ্রিত রয়েছে।
  • ৭. নোটের পিছনের দিকে কুসুম্বা মসজিদ, নওগাঁ এর ছবি মুদ্রিত আছে।

একটি ১০০ টাকার নোট এর বৈশিস্ট :

       
  • ১. গভর্নর আতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এ নোটের সাইজ ১৪০ × ৬২ মিলিমিটার।
  • ২. নোটটি সিনথেটিক ফাইবার মিশ্রিত অধিক টেকসই কাগজে মুদ্রিত।
  • ৩. কাগজে জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি; প্রতিকৃতির নিচে অতি উজ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে ১০০ লেখা আছে।
  • ৪. বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির জলছাপের বামপাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের উজ্বলতর ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপ রয়েছে।
  • ৫. নোটের সামনের দিকে ইন্টাগিথও কালিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুদ্রিত।
  • ৬. উপরের ডানদিকের কোণায় OVI কালিতে ‘100' লেখাটি সরাসরি তাকালে সোনালী এবং তির্জকভাবে তাকালে সবুজ রং দেখা যাবে।
  • ৭. নোটের ডানদিকে আড়াআড়িভাবে ইন্টাগিথও কালিতে ৭টি লাইন আছে; হাতের স্পর্শে এগুলো সহজেই অনুভব করা যাবে।
  • ৮. নোটের বাম পাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা; যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের লগো ও ১০০ টাকা লেখা আছে; সরাসরি তাকালে ‘লগো' ও ‘১০০' লেখা সাদা দেখাবে; কিন্তু পাশ থেকে দেখলে বা ৯০ ডিগ্রী-তে নোটটি ঘুরালে তা কালো দেখাবে।
  • ৯. নোটের নিচের বর্ডারে সুপ্ত বা লুকানো অবস্থায় ‘১০০' মুদ্রিত আছে, নোটটি কৌণিকভাবে ধরলে লুকানো লেখাটি দেখা যাবে।
  • ১০. নোটের ডানদিকে অন্ধদের জন্য ৩টি ছোট বিন্দু রয়েছে যা হাতের স্পর্শে উচু-নিচু অনুভূত হবে।
  • ১১. নিরাপত্তা সূতার বামপাশে খালি চোখে ১টি সরলরেখা দেখা যাবে, যেগুলোয় ‘BANGLADESH BANK 100 TAKA' কথাগুলো পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। লেখাগুলো অতি ছোট আকারের হওয়ায় আঁতশী কাঁচ ব্যতীত খালি চোখে দেখা যাবে না।
  • ১২. নোটের পটভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা অফসেটে জাতীয় স্মৃতিসৌধ মুদ্রিত রয়েছে।
  • ১৩. নোটের পেছন দিকে ইন্টাগিথও কালিতে ঢাকার তারা মসজিদ মুদ্রিত আছে।
  • ১৪. নোটের উভয় পিঠের অধিকাংশ লেখা ও ডিজাইন (সামনে বর্ডার, বাংলা ১০০, ইংরেজী 100, মধ্যভাগের লেখা, পেছনে তারা মসজিদ ও বর্ডার) ইন্টাগিথও কালিতে মুদ্রিত হওয়ায় হাতের আঙ্গুলের স্পর্শে সেগুলো অসমতল বা উঁচু-নিচু অনুভূত হবে।

একটি ৫০০ টাকার নোট এর বৈশিস্ট :

  
  • ১. গভর্নর আতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এ নোটের সাইজ ১৫২ × ৬৫ মিলিমিটার।
  • ২. নোটটি সিনথেটিক ফাইবার মিশ্রিত অধিক টেকসই কাগজে মুদ্রিত।
  • ৩. কাগজে জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি; প্রতিকৃতির নিচে অতি উজ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে ৫০০ লেখা আছে।
  • ৪. বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির জলছাপের বামপাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের উজ্বলতর ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপ রয়েছে।
  • ৫. নোটের সামনের দিকে ইন্টাগিথও কালিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুদ্রিত।
  • ৬. উপরের ডানদিকের কোণায় OVI কালিতে ‘500' লেখাটি সরাসরি তাকালে সোনালী এবং তির্জকভাবে তাকালে সবুজ রং দেখা যাবে।
  • ৭. নোটের ডানদিকে আড়াআড়িভাবে ইন্টাগিথও কালিতে ৭টি লাইন আছে; হাতের স্পর্শে এগুলো সহজেই অনুভব করা যাবে।
  • ৮. নোটের বাম পাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা; যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের লগো ও ৫০০ টাকা লেখা আছে; সরাসরি তাকালে ‘লগো' ও ‘৫০০' লেখা সাদা দেখাবে; কিন্তু পাশ থেকে দেখলে বা ৯০ ডিগ্রী-তে নোটটি ঘুরালে তা কালো দেখাবে।
  • ৯. নোটের নিচের বর্ডারে সুপ্ত বা লুকানো অবস্থায় ‘৫০০' মুদ্রিত আছে, নোটটি কৌণিকভাবে ধরলে লুকানো লেখাটি দেখা যাবে।
  • ১০. নোটের ডানদিকে অন্ধদের জন্য ৪টি ছোট বিন্দু রয়েছে যা হাতের স্পর্শে উচু-নিচু অনুভূত হবে।
  • ১১. নিরাপত্তা সূতার বামপাশে খালি চোখে ১টি সরলরেখা দেখা যাবে, যেগুলোয় ‘BANGLADESH BANK 500 TAKA' কথাগুলো পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। লেখাগুলো অতি ছোট আকারের হওয়ায় আঁতশী কাঁচ ব্যতীত খালি চোখে দেখা যাবে না।
  • ১২. নোটের পটভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা অফসেটে জাতীয় স্মৃতিসৌধ মুদ্রিত রয়েছে।
  • ১৩. নোটের পেছন দিকে ইন্টাগিথও কালিতে বাংলাদেশের কৃষি কাজের দৃশ্য মুদ্রিত আছে।
  • ১৪. নোটের উভয় পিঠের অধিকাংশ লেখা ও ডিজাইন (সামনে বর্ডার, বাংলা ৫০০, ইংরেজী 500, মধ্যভাগের লেখা, পেছনে কৃষি কাজের দৃশ্য ও বর্ডার) ইন্টাগিথও কালিতে মুদ্রিত হওয়ায় হাতের আঙ্গুলের স্পর্শে সেগুলো অসমতল বা উঁচু-নিচু অনুভূত হবে।

একটি ১০০০ টাকার নোট এর বৈশিস্ট :

    
  • ১. গভর্নর আতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এ নোটের সাইজ ১৬০ × ৭০ মিলিমিটার।
  • ২. নোটটি সিনথেটিক ফাইবার মিশ্রিত অধিক টেকসই কাগজে মুদ্রিত।
  • ৩. কাগজে জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি; প্রতিকৃতির নিচে অতি উজ্বল ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপে 1000 লেখা আছে।
  • ৪. বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির জলছাপের বামপাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের উজ্বলতর ইলেক্ট্রোটাইপ জলছাপ রয়েছে।
  • ৫. নোটের সামনের দিকে ইন্টাগিথও কালিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুদ্রিত।
  • ৬. উপরের ডানদিকের কোণায় OVI কালিতে ‘1000' লেখাটি সরাসরি তাকালে সোনালী এবং তির্জকভাবে তাকালে সবুজ রং দেখা যাবে।
  • ৭. নোটের ডানদিকে আড়াআড়িভাবে ইন্টাগিথও কালিতে ৭টি লাইন আছে; হাতের স্পর্শে এগুলো সহজেই অনুভব করা যাবে।
  • ৮. নোটের পিছনের দিকে ইন্টাগিথও কালিতে জাতীয় সংসদ ভবন মুদ্রিত।
  • ৯. নোটের বাম পাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা; যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের লগো ও ১০০০ টাকা লেখা আছে; সরাসরি তাকালে ‘লগো' ও ‘১০০০' লেখা সাদা দেখাবে; কিন্তু পাশ থেকে দেখলে বা ৯০ ডিগ্রী-তে নোটটি ঘুরালে তা কালো দেখাবে।
  • ১০. নোটের নিচের বর্ডারে সুপ্ত বা লুকানো অবস্থায় ‘১০০০' মুদ্রিত আছে, নোটটি কৌণিকভাবে ধরলে লুকানো লেখাটি দেখা যাবে।
  • ১১. নোটের ডানদিকে অন্ধদের জন্য ৫টি ছোট বিন্দু রয়েছে যা হাতের স্পর্শে উচু-নিচু অনুভূত হবে।
  • ১২. নিরাপত্তা সূতার বামপাশে খালি চোখে পরপর ২টি সরলরেখা দেখা যাবে, যেগুলোর একটি ‘1000 TAKA' এবং অন্যটি ‘BANGLADESH BANK' কথাগুলো পুনঃ পুনঃ মুদ্রিত রয়েছে। লেখাগুলো অতি ছোট আকারের হওয়ায় আঁতশী কাঁচ ব্যতীত খালি চোখে দেখা যাবে না।
  • ১৩. নোটের পটভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা অফসেটে জাতীয় স্মৃতিসৌধ মুদ্রিত রয়েছে।
  • ১৪. নোটের পেছন দিকে ইরিডিসেন্ট ব্যান্ড বা স্ট্রাইপে BANGLADESH BANK লেখা আছে; নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং পরিবর্তন হয়।
  • ১৫. নোটের উভয় পিঠের অধিকাংশ লেখা ও ডিজাইন (সামনে বর্ডার, বাংলা ১০০০, ইংরেজী 1000, মধ্যভাগের লেখা, পেছনে সংসদ ভবন ও বর্ডার) ইন্টাগিথও কালিতে মুদ্রিত হওয়ায় হাতের আঙ্গুলের স্পর্শে সেগুলো অসমতল বা উঁচু-নিচু অনুভূত হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ
তথ্য সুত্র : বাংলাদেশ ব্যাংক  , ডাউনলোড লিংক

মহানবী (স:)-এর ১২টি প্রিয় খাবার


মহানবী (স:)-এর ১২টি প্রিয় খাবার


মহানবী (স:)-এর ১২টি প্রিয় খাবার



ডা. মোড়ল নজরুল ইসলাম :

প্রায় দেড় হাজার বছর আগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স:) এর পছন্দের ১২টি খাবার ও তাঁর গুণাবলী এখানে উল্লেখ করা হলো। এসব খাবার নবীজী (স:) আহার করতেন এবং দেড় হাজার বছর পর আজকের বিজ্ঞান গবেষণা করে দেখেছে নবীজী (স:) এর বিভিন্ন খাবারের গুণাগুণ ও উপাদান অত্যন্ত যথাযথ ও নির্ভুল, নিরঙ্কুশভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নবীজী (স:) এর খাবারের মধ্যে রয়েছে বার্লি, খেজুর, ডুমুর, আঙ্গুর, মধু, তরমুজ, দুধ, মাশরুম, অলিভ অয়েল, ডালিম-বেদানা, ভিনেগার ও পানি। খাবারের গুণাবলী এখানে উল্লেখ করা হলো:

এক: বার্লি (জাউ): এটা জ্বরের জন্য এবং পেটের পীড়ায় উপকারী।

দুই: খেজুর: খেজুরের গুণাগুণ ও খাদ্যশক্তি অপরিসীম। খেজুরের খাদ্যশক্তি ও খনিজ লবণের উপাদান শরীর সতেজ রাখে। নবীজী (স:) বলতেন, যে বাড়ীতে খেজুর নেই সে বাড়ীতে কোন খাবার নেই। এমনকি সন্তান প্রসবের পর প্রসূতি মাকে খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আল্লাহর নবী।

তিন: ফিগস বা ডুমুর: ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ভেষজগুণ সম্পন্ন যাদের পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী খাবার।

চার: আঙ্গুর: নবীজী (স:) আঙ্গুর খেতে অত্যন্ত ভাল বাসতেন। আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। এই খাবারের উচ্চ খাদ্য শক্তির কারণে এটা থেকে আমরা তাত্ক্ষণিক এনার্জি পাই এবং এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আঙ্গুর কিডনির জন্য উপকারী এবং বাওয়েল মুভমেন্টে সহায়ক। যাদের আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম আছে তারা খেতে পারেন।

পাঁচ: মধু- মধুর নানা পুষ্টিগুণ ও ভেষজ গুণ রয়েছে। মধুকে বলা হয় খাবার, পানীয় ও ওষুধের সেরা। হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে মধু পান ডায়রিয়ার জন্য ভালো। খাবারে অরুচি, পাকস্থলীর সমস্যা, হেয়ার কন্ডিশনার ও মাউথ ওয়াশ হিসেবে উপকারী।

ছয়: তরমুজ- সব ধরনের তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নবীজী (স:) তরমুজ আহারকে গুরুত্ব দিতেন। যেসব গর্ভবতী মায়েরা তরমুজ আহার করেন তাদের সন্তান প্রসব সহজ হয়। তরমুজের পুষ্টি, খাদ্য ও ভেষজগুণ এখন সর্বজনবিদিত ও বৈজ্ঞানিক সত্য।

সাত: দুধ- দুধের খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণ ও ভেষজগুণ বর্ণনাতীত। দেড় হাজার বছর আগে বিজ্ঞান যখন অন্ধকারে তখন নবীজী (স:) দুধ সম্পর্কে বলেন, দুধ হার্টের জন্য ভালো। দুধ পানে মেরুদন্ড সবল হয়, মস্তিষ্ক সুগঠিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। আজকের বিজ্ঞানীরাও দুধকে আদর্শ খাবার হিসেবে দেখেন এবং এর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি অস্থিগঠনে সহায়ক।

আট: মাশরুম- আজ বিশ্বজুড়ে মাশরুম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং মাশরুম নিয়ে চলছে নানা গবেষণা। অথচ দেড় হাজার বছর আগে নবীজী (স:) মাশরুম চোখের জন্য ভালো এবং এটা বার্থ কন্ট্রোলে সহায়ক এবং মাশরুমের ভেষজগুণের কারণে এটা নার্ভ শক্ত করে এবং শরীর প্যারালাইসিস বা অকেজো হওয়ার প্রক্রিয়া রোধ করে।

নয়: অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েলের খাদ্য ও পুষ্টিগুণ বহুমুখী। তবে আজ মানুষের ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা ও বয়স ধরে রাখার জন্য যারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছেন তাদের দেড় হাজার বছর আগে নবীজী (স:) অলিভ অয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে অলিভ অয়েল ত্বক ও চুলের জন্য ভালো এবং বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক বা বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে। এছাড়া অলিভ অয়েল পাকস্থলীর প্রদাহ নিরাময়ে সহায়ক।

দশ: ডালিম-বেদানা: বেদানার পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণের পাশাপাশি এটার ধর্মীয় একটি দিক আছে এবং নবীজী (স:) বলতেন, এটা আহারকারীদের শয়তান ও মন্দ চিন্তা থেকে বিরত রাখে।

এগার: ভিনেগার- ভিনেগারের ভেষজ গুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। নবীজী (স:) অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ভিনেগার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অথচ আজকের এই মডার্ন ও বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের যুগে বিশ্বের বড় বড় নামি-দামি রেস্টুরেন্ট বিশেষ করে এলিট ইটালিয়ান রেস্টুরেন্টে অভিল অয়েল ও ভিনেগার এক সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।

বার: খাবার পানি: পানির অপর নাম জীবন। পানির ভেষজগুণ অপরিসীম। দেড় হাজার বছর আগে নবীজী (স:) পানিকে পৃথিবীর সেরা ড্রিংক বা পানীয় হিসাবে উল্লেখ করেছেন। সৌন্দর্য চর্চা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য রক্ষায় চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা আজ প্রচুর পানি পান করতে বলেন।

সারাদেশে মোবাইল ফোন




ডা. অপূর্ব পন্ডিত :

সারাদেশে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন অপারেটররা ইচ্ছেমতো মোবাইল টাওয়ার বসাচ্ছে। এসব টাওয়ার থেকে নিঃসরিত রেডিয়েশনের কারণে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে নারিকেল ও সুপাড়ি উৎপাদন ক্ষতির মুখে পড়ছেÑ একটি এনজিওর এরকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে বিটিআরসি একটি কমিটি তৈরি করে যারা মোবাইল ফোন টাওয়ারের এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো বিশ্লেষণ করবে।




এনজিওটির ফিল্ডওয়ার্কাররা জানান, মোবাইল টাওয়ারের কাছাকাছি সুপাড়ি ও নারিকেল আকারে ছোট হয়ে আসছে এবং টাওয়ার সংলগ্ন গাছগুলোর ফলে কালো দাগ পড়ে। বিটিআরসির কমিটি এ ব্যপারে কোনো পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করতে পারেনি তবে গ্লোবাল সিস্টেম অব মোবাইল (জিএসএমের) একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল ২০১০ সালে একটি স্বল্প পরিসরের গবেষণায় জানায়Ñ ঢাকা শহরে অত্যাধিক মোবাইল টাওয়ার বসানোর ফলে চড়-ই জাতীয় পাখি দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে। এ মুহূর্তে গ্রামীণ ফোনের ১৪ হাজার টাওয়ার এবং বাংলালিংকের ৫ হাজার ২শ, রবির ৮ হাজার ২শ, এয়ারটেলের ৪ হাজার ১শ, সিটিসেলের ২ হাজার ৯শ এবং টেলিটকের ১৪শ টাওয়ার রয়েছে।




বুয়েটের টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মোবাইল টাওয়ার থেকে নিসৃত রেডিয়েশনের পরিমাণ ১৭ হাজার ১শ থেকে ৭২ হাজার মাইক্রোওয়াট। মানুষ ১ লাখ মাইক্রোওয়াট পর্যন্ত রেডিয়েশন সহ্য করতে পারে, পাখিরা সাধারণত ৪০ হাজার মাইক্রোওয়াটের বেশি সহ্য করতে পারে না। তাই পাখিরা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তবে মানুষেরাও কেউ কেউ শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে ৫০ হাজার মাইক্রোওয়াটেই অসুস্থ হতে পারে। তার বিভিন্ন রোগ এমনকি ক্যান্সার জাতীয় সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বুয়েটের প্রভাষক ওয়াসিম হোসাইন যিনি মোবাইল টাওয়ারের উপর টরোন্টোয় গবেষণা করছেন তিনি বলেন, মোবাইল টাওয়ারের যত কাছে আপনি থাকবেন ততই আপনার শরীরে এর প্রভাব বাড়বে। বাংলাদেশে মোবাইল অপারটেররা আন্তর্জাতিক আইন অগ্রাহ্য করে ইচ্ছেমতো ছাদ বা ছোট ছোট জায়গা ভাড়া নিয়ে যেভাবে টাওয়ার বসাচ্ছে সেটা স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্যে মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেবে।




মোবাইলের টাওয়ার একটি থেকে অন্যটি অবশ্যই ৩শ মিটার দূরে বসানো উচিত বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ। মোবাইল অপারেটররা বলছেন, সরকার যদি এ বিষয়ক কোনো গবেষণা করতে চায় তবে তারা পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করবেন। তবে এতগুলো নেটওয়ার্ক সমন্বিত উদ্যোগ কী করে নেবে তা অবশ্য এখন পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি। ইএমআর পদ্ধতিতে এই রেডিয়েশন অনেকটাই কমানো সম্ভব বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।




বিটিআরসির স্পেকট্রাম ডিরেক্টার কর্নেল রকিবুল হোসেনের মতে মোবাইল টাওয়ারের এই ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বাস্তবিক কোনো গবেষণা এখন পর্যন্ত হয়নি, যেগুলো বলা হচ্ছে সবই এখনও থিওরিটিক্যাল। তবে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই।

কিভাবে হজ্ব করবেন






                                                  
  
                              কিভাবে হজ্ব করবেন



হজ্ব ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য যা অবশ্যই পালনীয় কর্তব্য। এতে শৈথিল্য বা কার্পণ্য করার কোনো অবকাশ নেই। পবিত্র হজ্ব খাঁটি সহিহ শুদ্ধভাবে পালনের ক্ষেত্রে শরিয়তের অতীব প্রয়োজনীয় মাসয়ালা-মাসায়েল অর্থাত্, বিধিবিধান রয়েছে যা হয়তো হজ্ব পালনকারীদের জন্য কিছুটা সহায়ক হতে পারে। পবিত্র হজ্ব ফরজ হওয়ার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে জ্ঞানসম্পন্ন বালেগ, সুস্থ সবল ও স্বাধীন হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং পবিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণের যাবতীয় সাংসারিক খরচের পরিমাণ এমন হতে হবে যে হজ্ব পালন শেষে বাড়ি গমন পর্যন্ত পরিবারবর্গ স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারে। এর সাথে যাতায়াত, নিরাপদ থাকা, হজ্বে প্রয়োজনীয় সম্বল থাকা এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে মোহরেম লোক সাথে থাকার নিশ্চয়তা।

সাধারণত বাংলাদেশের মানুষ তামাত্তু হজ্ব করে থাকেন। তামাত্তু হজ্বে সর্বপ্রথম কাজ উমরাহর জন্য ইহরাম যা ফরজ। গোসল অথবা ওযু সেরে মীক্বাত অতিক্রম করার আগেই সেলাইবিহীন একটি চাদর পরুন, অপর একটি চাদর গায়ে জড়িয়ে নিন। এরপর অবস্থানুযায়ী দু’রাক’আত নামাজ পড়ুন। এবার ইহরামের নিয়ত করুন এবং আওয়াজ করে অন্তত একবার (তিনবার হলে ভালো) তালবিয়া পাঠ করুন।

হজ্বের প্রস্তুতি: ৮ যিলহজ্ব থেকে হজ্বের অনুষ্ঠান শুরুর জন্য অপেক্ষা করবেন। সাথে সাথে ইবাদত-বন্দেগিতে লিপ্ত থেকে সুষ্ঠু ও নির্ভুল হজ্ব সম্পাদন করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে থাকবেন। হজ্বের দিনগুলোতে আপনার করণীয়:হজ্বের মূল দিবসগুলো হচ্ছে ৮ যিলহজ্ব থেকে ১৩ যিলহজ্ব পর্যন্ত। হজ্বের ইহরাম (ফরজ) :৮ যিলহজ্ব তারিখে হজ্বের নিয়ত করে ইহরাম বেঁধে সূর্যোদয়ের পর মিনা অভিমুখে রওয়ানা হবেন। তালবিয়াহ পাঠ করতে করতে। মিনায় অবস্থান (সুন্নত) : ৮ যিলহজ্ব যোহরের আগে মিনায় পৌঁছে যোহরের নামাজ পড়বেন। অত:পর আসর, মাগরিব ও এশা এবং ৯ যিলহজ্ব ফরজ নামাজ আদায় করবেন। মিনাতে অবস্থানকালে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর কাছে রহমত কামনা করবেন। উকুফে আরাফা (ফরজ) : ৯ যিলহজ্ব মিনা থেকে ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয়ের পর তালবিয়া পাঠ করতে করতে আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের জন্য রওয়ানা হবেন। রাসূল ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাই হচ্ছে হজ্ব। আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান অবশ্যই করবেন। যোহর ও আসরের নামাজ- জোহরের প্রথম ওয়াক্তে এক আজান ও দু’ইকামাতে কসর করে একত্রে পড়তে হয়। সেখানে অবস্থানের সময় বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে অবস্থান সঠিক হয়। কারণ, আরাফাত সংলগ্ন ‘আরানা উপত্যকা’ অবস্থিত। সেখানে ‘মসজিদে নামিরা’ অবস্থিত। হাজীদের ভুল করে ওই উপত্যকায় অবস্থান করতে দেখা যায়। যা হোক সূর্যাস্তের পর মুজদালেফায় রাতযাপনের জন্য রওয়ানা হবেন। মুজদালেফায় অবস্থান :সূর্যাস্তের পর আরাফা বা রাস্তায় কোথাও মাগরিবের নামাজ না পড়ে সোজা মুযদালেফার উদ্দেশ্যে চলতে থাকুন। মুয়দালেফায় পৌঁছে এক আজানে ও দু’ইকামতে দু’ওয়াক্ত নামাজ কসর আদায় করবেন (কসর মাগরিবের হবে না, শুধু এশার হবে) মুযদালেফায় অবস্থানকালে জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপের জন্য মুদ্রাকারের ৪৯ বা ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করবেন। ফজরের নামাজ আদায় করে প্রত্যুষে আকাশ ফর্সা হতে থাকলে মিনার দিকে রওয়ানা হবেন। কঙ্কর নিক্ষেপ (ওয়াজিব) : ১০ যিলহজ্ব বড় জামারাতে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত। কঙ্কর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব এবং নিক্ষেপের সময় ‘তাকবির’ বলবেন। নিক্ষেপ করার সময় স্তম্ভের গায়ে নয়, বৃত্তের মধ্যে পড়লে হবে। সতর্কতার সাথে করবেন কারণ ওই সময় প্রচন্ড ভিড়ের কারণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। কুরবানি করা (ওয়াজিব) : ১০ যিলহজ্ব কঙ্কর নিক্ষেপ শেষে কুরবানি করবেন। অত:পর মাথা মুণ্ডন করে অথবা চুল ছেঁটে গোসল সেরে ইহরামের কাপড় খুলে স্বাভাবিক কাপড় পরবেন। খেয়াল রাখতে হবে যেন কঙ্কর মারা, চুল ছাঁটা বা মাথা মুন্ডন করা এবং কুরবানি করার মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়। তা না হলে দম বা কাফফারা দিয়ে হজ্ব শুদ্ধ করে নিতে হবে।

তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ): ১০ যিলহজ্ব কঙ্কর মারা শেষে তাওয়াকে জিয়ারতের উদ্দেশ্যে মিনা থেকে ‘খানায়ে কাবা’ যেতে হবে। ওই দিন সূর্যাস্তের আগেই তাওয়াফে জিয়ারতের কাজ সারতে হবে। তা না হলে ১২ জিলহজ্ব তারিখের পরে তাওয়াফ করে দম দিতে হবে। অবশ্য মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কারণে না করতে পারলে পবিত্র হওয়ার পর তা সমাধা করবেন। কঙ্কর নিক্ষেপ (ওয়াজিব): ১১ যিলহজ্ব দুুপুরের পর (সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়লে) প্রথমে ছোট জামারায়, তারপর মধ্যম জামারায় এবং বড় জামারায় সাতটি করে মোট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। ১২ যিলহজ্ব আগের দিনের মতোই করবেন। জামারাতে কঙ্কর নিক্ষেপের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য একই বিধান। তবে মহিলাদের রাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করা জায়েয। নিজ হাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন। বিনা ওজরে অন্য কারো মাধ্যমে কঙ্কর নিক্ষেপ করা জায়েয নয়। কুরবানি: ক্বিরান হজ্জ ও তামাত্তু হজ্ব পালনকারীদের ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব। হজ্বকারী আল্লাহর সন্তুষ্টি ও কুরবানির উদ্দেশ্যে উট, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল যেকোনো একটি বা একাধিক জবাই করে যে রক্ত প্রবাহ করেন তাকে কুরবানি বলে। অবশ্য সৌদি কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে অনুমোদিত ব্যাংকের বুথ স্থাপন করেছে। সেখানে টাকা জমা দিয়ে কুপন সংগ্রহ করলেই কুরবানির ব্যবস্থা হয়ে যায়। সর্বশেষে বিদায়ী তাওয়াফ করে মক্কা শরিফ থেকে বিদায় নেবেন। যারা মদিনাতে যাননি, তারা মসজিদে নববী জিয়ারাতের উদ্দেশ্যে মদিনা যাবেন। মিনা ত্যাগ: মিনায় থাকতে না চাইলে ১২ যিলহজ্জ্ব সন্ধ্যার আগে বা পরে মিনা ত্যাগ করুন। সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা ভালো।

বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব): মক্কা শরিফ থেকে বিদায়ের আগে বিদায়ী তাওয়াফ করুন। এতে ইজতেবা, রমল, সায়ি নেই। মাকামে ইবরাহিমে দু’রাক’আত নামাজ পড়ে মুলতাজাম, কা’বার দরজা ও হাতিমে দোয়া করুন। জমজমের পানি পান করেও দোয়া করুন। তাওয়াফে জিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াক করে থাকলেও বিদায়ী তাওয়াফের ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। মহিলারা শারীরিক কারণে বিদায়ী তাওয়াফ করতে না পারলে কোনো অসুবিধা নেই, এ জন্য কোনো দম বা কাফফারা নেই। তালবিয়া শেষে কয়েকবার দুরূদ শরীফ পাঠ করে দোয়া করুন। তালবিয়ার বাংলা অর্থ: আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোন শরীক নেই, আমি হাজির। সকল প্রশংসা ও নেয়ামত তোমার জন্যেই এবং রাজত্বও তোমার, তোমার কোন শরীক নেই।” হজ্বের সময় এটি হাজীদের সঙ্গীত এবং হজ্ব ও ওমরার স্পষ্ট স্মারক।

মহিলাদের ইহ্রামে ব্যতিক্রম কিছু নিয়মাবলি:১. মহিলাদের ইহ্রামের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক নেই। মহিলারা সেলাইযুক্ত ঐ সমস্ত কাপড় পরিধান করবেন, যেগুলো তাঁরা স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করে থাকেন। যেমন- শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, ম্যাক্সি, বোরখা ইত্যাদি। (উজ্জ্বল রং এর নয়)। তবে শাড়ি পরে তাওয়াফ ও সায়ী করা অনেক অসুবিধা ও কষ্টকর। আরামদায়ক জুতাও ব্যবহার করতে পারবেন। ইহ্রাম বাঁধার পূর্বে গোসল করে নিন। অসুবিধা থাকলে শুধু ওযু করে নিন। খুব ভালভাবে চিরুনি দিয়ে চুল আঁঁচড়িয়ে নিন। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য হজ্বের নিয়ত এবং ইহ্রামের অন্যান্য নিয়ম একই রকম। কিন্তু মহিলারা তালবিয়া মনে মনে পড়বেন। ২. ইহ্রাম অবস্থায় মহিলারা মুখমণ্ডল খোলা রাখবেন। ইহ্রাম অবস্থায় ওযু করার সময় মাথার রুমাল সরিয়ে চুলের উপরেই মাথা মাসেহ করতে হবে। ইহ্রাম অবস্থায় অলংকার এবং হাত মুজা পরিধান করা জায়েয, তবে না করাই ভাল। মহিলাদের জন্য মাথা মুণ্ডন করা নিষেধ। তাওয়াফের সময় মহিলারা কখনও ইযেতবা এবং রমল করবেন না এবং সায়ী করার সময় সবুজ বাতি দুটির মধ্যবর্তী স্থানে দৌড়াবেন না। গলায় ফুলের হার ব্যবহার মাকরূহ। ৩. ইহ্রাম বাঁধার সময় যদি কোন মহিলার হায়েয বা শরীর খারাপ অবস্থায় থাকে, তবে এ অবস্থায়ই ইহ্রাম বেঁধে নেবেন, ইহ্রামের নিয়তে ওযু-গোসল করে কেবলামুখী হয়ে বসে নিয়ত করবেন এবং তালবিয়া পাঠ করবেন, নামায পড়বেন না, তালবিয়া ও যিকির-আযকারে মনোনিবেশ করবেন, মক্কা শরীফে পৌঁছে মসজিদে হারামে প্রবেশ করবেন না। ১১. পুরো একদিন ও একরাত মাথা বা মুখমন্ডল আবৃত করে রাখলে ‘দম’ আর এর কম হলে সদকা দিতে হবে।

ইহ্রাম বাঁধার নিয়ম (পুরুষ ও মহিলা) : ১. ইহ্রাম বাঁধার পূর্বে নখ, গোঁফ, চুল (গুপ্তস্থানসহ) কেটে পরিচ্ছন্ন হয়ে গোসল করে আতর সুগন্ধি মেখে তৈরি হয়ে ইহ্রামের কাপড় পরিধান করুন। ২. ইহ্রাম বাঁধার সময়ে গোসল করা সুন্নাত। মহিলাদের অসুবিধা থাকলে ওযু করলেও চলবে। গোসলের পর ভালভাবে চুল আঁচড়িয়ে নেয়া দরকার। ৩. পুরুষরা সেলাই করা কাপড় খুলে একটা সাদা চাদর নাভির উপর থেকে লুঙ্গির মত পরে নিন। তার উপর পকেটওয়ালা একটি বেল্ট বেঁধে তার মধ্যে টাকা পয়সা রাখবেন। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর ঢেকে রাখা ফরয। আর একখানা চাদর গায়ে জড়িয়ে নিন। যেন দু’কাঁধ ও পিঠ ঢাকা থাকে। ইহ্রামের পোশাক কাফনের ন্যায় সাদা ও নতুন হওয়া উত্তম। ৪. প্রস্তুতি হিসেবে ইহ্রাম বাঁধার আগে দু’ রাক‘আত নফল নামায পড়ুন। ১ম রাক‘আতে সূরা সূরা ফাতেহা কাফিরুন এবং ২য় রাক‘আতে সূরা ইখলাস পড়া উত্তম। তবে মাকরূহ ওয়াক্তে যদি ইহরামের নিয়ত করতে হয় তখন এই নফল নামায পড়া ঠিক হবে না। এখনও আপনি ইহ্রামের নিয়ত করেননি, সেহেতু ইহ্রামের নিয়তের পূর্বে প্রস্তুতি হিসেবে ঐ দু’রাক‘আত নফল নামায পড়ার সময় মাথায় টুপি দিয়ে (পুরুষের জন্য) পড়বে। এখন ইহ্রামের নিয়ত করবেন। এজন্য সালাম ফিরিয়ে মাথার টুপি খুলে ফেলুন। দু’কাঁধ, পিঠ উপরের সাদা চাদরটি দিয়ে ঢেকে রাখুন। উমরাহ এবং অন্য তিন প্রকার হজ্বের যে কোন একটির জন্য পূর্ব প্রস্তুতি ও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মনে মনে নিয়ত করুন। নিয়ত হচ্ছে: হে আল্লাহ! আমি উমরাহ্ পালনের নিয়াত করলাম, একে আমার জন্য সহজ করে দাও। আমার পক্ষ থেকে কবুল কর। নিয়ত অতি জরুরি। কারণ নিয়ত গুণে বরকত ও রহমত। মনে মনে নিয়তের পর পরই, উচ্চৈঃস্বরে আওয়াজ করে তিনবার তালবিয়া পাঠ করুন। এ তালবিয়া মেয়েলোকরা মনে মনে পড়বেন। ইহ্রামের জন্য তালবিয়া ও নিয়ত উভয় জরুরি। তালবিয়াটি হচ্ছে লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি-মাতা, লাকা ওয়ালমুল্ক, লা শারীকা লাক”।


[লেখক :খতিব, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, ঢাকা]

বিদেশ যাবেন কি ?তাহলে দেখেনিন


  • সংগ্রহক্রীত
  • নাম নিবন্ধন করুন
কর্মজীবি হয়ে বিদেশ গমনের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিসের অন-লাইন ডাটাবেজ নেটওয়ার্কে আপনার নাম নিবন্ধন করতে হবে। তবে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস বা ডেমো অফিস থেকে সংগৃহীত নাম নিবন্ধন ফর্ম পূরণ করে সেখানকার নিবন্ধন সেবা কর্মকর্তার মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। নাম নিবন্ধন শেষে আপনি জবসিকার্স কার্ড বা এমপ্লয়ি রেজিস্ট্রেশন কার্ড হাতে পাবেন। তবে শুধুমাত্র নাম নিবন্ধনই চাকুরির নিশ্চিয়তা বহন করে না। নাম নিবন্ধনের পুরো প্রক্রিয়াটি জানতে বিস্তারিত জানুন বাটনে ক্লিক করুন। এছাড়া নিচের লিংকগুলোতে ক্লিক করলে অন-লাইনে নাম নিবন্ধনের প্রক্রিয়াসহ নাম নিবন্ধন ফর্ম পূরণের প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী সহজভাবে বুঝতে পারবেন।
  • নাম নিবন্ধন করুন
অন-লাইনে নিবন্ধন ফর্ম পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা- এখানে ক্লিক করলে বিএমইটি-এর অন-লাইন নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী দেখতে পাবেন।
http://www.bmet.org.bd/BMET/onlineRegistration-এর লিংকে ক্লিক করলে         বিএমইটি-এর অন-লাইন রেজিস্ট্রেশন উইন্ডো আসবে। এখানে অন-লাইনের মাধ্যমে ফর্ম পূরণ করে আপনি নিবন্ধন করতে পারবেন।
http//bmet.org.bd/BMET/downloadRegCard-এ লিংকে ক্লিক করলে নিবন্ধন কার্ড হাতে পাবেন। উল্লেখ্য যে, উপরের লিংকে ক্লিক করে বিএমইটি ওয়েবসাইটে গিয়ে অন-লাইন এ নাম নিবন্ধন শেষে বিন্ধন কার্ড হাতে পাবার জন্য এখানে ক্লিক করতে হবে।
http://bmet.org.bd/BMET/downloadAction-এ লিংকে ক্লিক করলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি (ডেমো) অফিসে নাম নিবন্ধনের জন্য যে আবেদনপত্রটি পয়োজন হয় তা পাওয়া যাবে। এতে ক্লিক করলে যে উইন্ডোটি আসবে সেখান থেকে ‘ডাউনলোড পিডিএফ ফরমেট রেজিস্ট্রেশন ফর্ম’ এ ক্লিক করলে আবেদনপত্রটি আপনার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে সেভ হয়ে যাবে। এরপর তা কাগজে প্রিন্ট করে আপনার সকল তথ্য হাতে লিখে আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস বা ডেমো অফিসে গিয়ে জমা করে চাকুরি প্রার্থী হিসেবে আপনার নাম নিবন্ধন করতে পারবেন।
পূরণকৃত নমুনা আবেদন ফর্ম- এ লিংকে ক্লিক করলে নিবন্ধনের দু’টি নমুনা আবেদন পত্রের নমুনা দেখতে পাবেন। একটি সরাসরি বিএমইটি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে অন-লাইনে নিবন্ধনের জন্য পূরণকৃত নমুনা আবেদন ফর্ম, অন্যটি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডেমো) অফিসের মাধ্যমে নিবন্ধনের জন্য পূরণকৃত নমুনা আবেদন ফর্ম। এখানে আপনার বোঝার সুবিধার জন্য উদাহরণস্বরুপ নাসরিন আক্তার নামের একজন ব্যক্তির তথ্য দিয়ে এ ফর্মগুলো পূরণ করা হয়েছে।
অন-লাইন নিবন্ধন ফর্ম পূরণের নিয়মাবলীর লিংক- এ লিংকে ক্লিক করলে অন-লাইনের মাধ্যমে নিবন্ধন ফর্ম পূরণ করার ক্ষেত্রে প্রদত্ত নিবন্ধন ফর্মটি পূরণের নিয়মাবলী দেখতে পাবেন।
এমপ্লয়ি রেজিস্ট্রেশন কার্ড এ ভুল সংশোধনের জন্য নমুনা আবেদন পত্র-এ লিংকে ক্লিক করলে রেজিস্ট্রেশন কার্ডে ভুল সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় আবেদনপত্রটির নমুনা আপনার কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে ডাউনলোড হয়ে যাবে। এরপর এর খালি স্থানগুলোতে আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য কম্পোজ শেষে কাগজে প্রিন্ট নিয়ে স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা করতে পারেন।
  • নাগরিক সনদপত্র ও জন্ম সনদপত্র তৈরি করুন
কর্মজীবি হয়ে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি ডাটাবেজে নাম নিবন্ধন করার সময় আপনার নাগরিক সনদপত্র ও পাসপোর্ট তৈরির সময় জন্ম সনদ প্রয়োজন হয়।
  • নাগরিক সনদপত্র পাওয়ার জন্য যা করতে হবে
নাগরিক সনদপত্র পাওয়ার জন্য আপনি যে এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সে এলাকার ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিসে যেতে হবে। এর জন্য আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ অথবা ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড কাউন্সিলের মেম্বর/কাউন্সিলর/ চেয়ারম্যান/মেয়র অফিস থেকে প্রাপ্ত চারিত্রিক সনদপত্র থাকতে হবে। নাগরিক সনদপত্র পেতে ইউনিয়নের ক্ষেত্রে খরচ ৫.০০ (পাঁচ) টাকা, পৌরসভার ক্ষেত্রে খরচ ১০.০০ (দশ) টাকা। এ সনদপত্র পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসের সচিবের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
  • জন্ম সনদপত্র পাওয়ার জন্য যা করতে হবে
জন্ম সনদপত্র পাওয়ার জন্য আপনি যে এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সে এলাকার ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিসে যেতে হবে। এ সনদপত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে নির্দিষ্ট আবেদনপত্র সংগ্রহ ও তা পূরণ করে জন্ম নিবন্ধন করতে হবে। নাগরিক সনদপত্রের মত এক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট অফিসের সচিবের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন শেষে জন্ম সনদ নেয়ার জন্য খরচ, বয়স ১৮ বছরের উর্ধে হলে ৫০ টাকা। আর ১৮ বছরের নিচে হলে কোন খরচ নেই। জন্ম সনদপত্র পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র পূরণের নির্দেশবলী-এ লিংকে ক্লিক করলে জন্ম সনদপত্র পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র পূরণের নির্দেশনা দেখতে পাবেন। এ নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে আপনার ইউনিয়ন/পৌরসভা/ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিস থেকে সংগৃহীত জন্ম সনদের আবেদনপত্রটিতে আপনার সকল তথ্য হাতে লিখে পূরণ করে জমা করতে পারেন।
  • পাসপোর্ট করুন
পাসপোর্ট হল বিদেশে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার থেকে দেয়া একটি পরিচয়পত্র। পাসপোর্ট ছাড়া আপনি কখনও বিদেশে যেতে পারবেন না। পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার আপনাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়। তবে যারা নতুন পাসপোর্ট করবেন বা পাসপোর্ট সংশোধন করবেন বা নবায়ন করবেন তারা অবশ্যই মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০১২ সালের পর থেকে হাতে লেখা পাসপোর্ট কোথাও গ্রহণ করবে না। তাই যাদের কাছে হাতে লেখা পাসপোর্ট রয়েছে তারা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করার জন্য এখনই উদ্যেগ নিন। যারা বিদেশে রয়েছেন তারা ২০১৪ সালের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রত্যেকটি দূতাবাসের মাধ্যমে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করাতে পারবেন। পাসপোর্ট তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি জানতে বিস্তারিত জানুন বাটনে ক্লিক করুন। এছাড়া পরের পৃষ্ঠায় উল্লিখিত লিংকগুলোতে ক্লিক করলে পাসপোর্ট ফর্ম পূরণের প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী সহজভাবে বুঝতে পারবেন।
http://www.dip.gov.bd/?q=node/55-এ লিংকে পাসপোর্ট তৈরির জন্য যে ফর্মটি পূরণ করতে হয়, তা দেয়া আছে এবং এটি আপনি প্রিন্ট করে আপনার সকল তথ্য হাতে লিখে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা করতে পারবেন।
এমআরপি’র জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে পূরণকৃত পিডিএফ ফর্মের নমুনা এখানে আপনার বোঝার সুবিধার জন্য উদাহরণস্বরূপ নাসরিন আক্তার নামের একজন ব্যক্তির তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করা হয়েছে।
এমআরপি’র জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে পূরণকৃত অন-লাইন ফর্মের নমুনা এখানে আপনার বোঝার সুবিধার জন্য উদাহরণস্বরূপ নাসরিন আক্তার নামের একজন ব্যক্তির তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করা হয়েছে।
পাসপোর্ট ফর্ম পূরণের নির্দেশাবলী-এ লিংকে পাসপোর্ট ফর্মের কোন তথ্য কোন স্থানে লিখতে হবে তা একটি ফর্মের মধ্যে নির্দেশনাকারে দেখানো হয়েছে। তবে এ নির্দেশনাগুলো শুধুমাত্র দেখার জন্য।
পাসপোর্ট অফিসগুলোর নাম ও ঠিকানা-এ লিংকে ক্লিক করলে সমগ্র বাংলাদেশের পাসপোর্ট প্রদানকারী বিভাগীয় ও আঞ্চলিক অফিসগুলোর নাম ও ঠিকানা দেখতে পাবেন। আপনার সুবিধা অনুযায়ী কোন অফিস থেকে পাসপোর্ট তৈরি করবেন তা নির্ধারণ করে নিন।
  • বিদেশে চাকুরির ব্যবস্থা করুন
বিদেশে কর্মজীবি হিসেবে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশে চাকুরি খোঁজার জন্য কয়েকটি উপায় রয়েছে যথা:
 বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ গমন করতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশে ৮৪৯টি বৈধ এজেন্সি রয়েছে। একটি লিংক দেয়া হল, এতে ক্লিক করলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি ওয়েবাসইটের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সর্বশেষ তালিকাটি দেখতে পাবেন: http://www.bmet.gov.bd/BMET/raHomeAction
এ লিংকে ক্লিক করলে বিদেশে কর্মী প্রেরণকারী যেকোন রিক্রুটিং এজেন্সির বৈধতা পরীক্ষা করা যায়। এখানে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির নাম, লাইসেন্স নম্বর অথবা মালিকের নম্বর দিয়ে সার্চ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া এতে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা, স্থগিত ও বাতিলকৃত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তালিকাও দেখা যায়।
 শুধুমাত্র নারীকর্মী বিদেশে প্রেরণকারী এজেন্সির সহায়তা নেয়ার মাধ্যমে বিদেশ গমন করতে পারেন। এখানে একটি লিংক দেয়া হল যেখানে ক্লিক করলে নারীকর্মী প্রেরণকারী এজেন্সিগুলোর নাম ঠিকানা পাওয়া যাবে। লিংকটি হল বাংলাদেশ থেকে নারীকর্মী প্রেরণকারী বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের ঠিকানা। এ তালিকাটি জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিস ভবনের এক্সটেনশন বিল্ডিং-এর দোতালায় অবস্থিত নারী অভিবাসী তথ্য কেন্দ্রে পাবেন। এছাড়া বিএমইটি অফিসের মূল ভবনের পাঁচতলায় অবস্থিত কর্মসংস্থান শাখায় বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সর্বশেষ তালিকাটি পাওয়া যায়। চাকুরি খোঁজার জন্য সহায়তা নেয়ার আগে যেকোনো এজেন্সিতে যোগাযোগ করার সময় অবশ্যই তাদের নাম ঠিকানা ও লাইসেন্স নম্বর বিএমইটির অফিস থেকে প্রাপ্ত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সর্বশেষ তালিকায় আছে কিনা তা নিজ দায়িত্বে পরীক্ষা করে নেবেন।
 আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট জেলা ডিসি অফিসে বিদেশগমনেচ্ছু কর্মীর তালিকায় নাম লেখার মাধ্যমে কর্মী হিসেবে সরকারিভাবে বিদেশ গমন করতে পারেন।
 বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বোয়েসেল-এর মাধ্যমে বিদেশ গমন করতে পারেন। বোয়েসেল’র সাথে যোগাযোগের ঠিকানা তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। বোয়েসেলের ওয়েবসাইটের লিংকটি হল: http://www.boesl.org.bd/ 
 এছাড়া বিদেশে অবস্থানরত আপরনার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব দ্বারা ভিসাপত্র সংগ্রহ করার মাধ্যমে বিদেশ গমন করতে পারেন।
 বিদেশে বাংলাদেশি কোন কোম্পানীর মাধ্যমে বিদেশ গমন করতে পারেন।
 জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটির মাধ্যমে বিদেশ গমন করতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ সরকারি পর্যায়ে কোন দেশের সাথে কর্মী প্রেরণের চুক্তি হলে বিএমইটি’র মাধ্যমে বিদেশ গমন করা যায়।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে বিদেশে কর্মজীবি হওয়ার জন্য বাংলাদেশে বৈধ প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে ফলে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে কেনো প্রতারক দালালের সহায়তা নেয়ার প্রয়োজন নেই। “আপনাকে কিছু করতে হবে না আমি সব করে দেব” এই ধরনের কোনো প্রলোভনে বিশ্বাস করবেন না বা বিশ্বাস করে বিদেশে চাকুরি পাবার আশায় কাউকে টাকা দেবেন না। উল্লেখ্য যে, এ ধরনের প্রলোভন শুধুমাত্র দালাল বা মধ্যসত্বভোগীরাই দিয়ে থাকে। কারণ কর্মজীবি হিসেবে বিদেশ গমনের প্রস্তুতি গ্রহণ প্রক্রিয়া ঘরে বসে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এ প্রক্রিয়ার অনেক ধাপেই প্রার্থীকে অর্থাৎ আপনার সম্পৃক্ত থাকা জরুরি।
  • ভিসা সংগ্রহ ও যাচাই করুন
আপনি যে মাধ্যমে (বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি, বোয়েসেল বা বিএমইটি) বিদেশে চাকুরির ব্যবস্থা করছেন তারা আপনার জন্য কাজের ভিসা সংগ্রহ করে দেবে। এক্ষেত্রে আপনার জন্য নির্দেশনা হল ভিসার আবেদনের পর নিজ দায়িত্বে ভিসার ব্যাপারে রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখবেন।
ভিসা হাতে পাবার পর ভিসা চেকিং করা একটি জরুরি বিষয়। আপনার ভিসাটি সঠিক কিনা তা যাচাই করাকেই বলে ভিসা চেকিং বা পরীক্ষা করা। ভিসা চেকিং (ভিসা সঠিক কিনা তা যাচাই) বা পরীক্ষার জন্য আপনাকে ঢাকায় অবস্থিত জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিসের ওয়ানস্টপ সার্ভিস ডেস্ক-এর সহায়তা নিতে হবে। আপনি সঠিক ভিসায় কর্মী হিসেবে বিদেশে যাচ্ছেন কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য ভিসা চেকিং বা পরীক্ষা করা খুব প্রয়োজনীয় একটি ধাপ।
কুইক ডেলিভারি সার্ভিস ডেস্ক
বিএমইটি অফিস বিল্ডিং (নিচতলা)
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)
৮৯/২, কাকরাইল
ঢাকা-১০০০
  • ভিসা সংগ্রহ ও যাচাই করুন
তবে ইন্টারনেটের সাহায্যে কয়েকটি দেশের ভিসা চেকিং আপনি নিজেই করতে পারবেন। আপনার এলাকার বা তার কাছাকাছি যে কোন ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র, পল্লীতথ্য কেন্দ্র বা ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন কোন সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে তথ্যকর্মীর সহায়তা নিয়ে ভিসা চেকিং করতে পারেন। নিম্নে কয়েকটি দেশের শ্রম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেয়া হল যেগুলোর সাহায্যে অন-লাইনের মাধ্যমে আপনি নিজের ভিসা নিজে চেকিং করতে পারবেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউ.এ.ই)-এর ভিসা চেক করার ঠিকানাটি হল: http://www.mol.gov.ae
কাতার-এর ভিসা চেকিং ঠিকানাটি হল: http://www.moi.gov.qa
বাহরাইন-এর ভিসা চেকিং ঠিকানাটি হল http://www.imra.gov.bh
  • চাকুরির চুক্তিপত্র বুঝে নিন
কর্মজীবি হয়ে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে চাকুরির চুক্তিপত্র হাতে পাওয়ার পর তা আসল কিনা তা পরীক্ষা করিয়ে নেয়া এবং এতে উল্লেখিত সকল বেতন-ভাতা, অন্যান্য শর্ত ও সুবিধাদি বুঝে নিয়ে স্বাক্ষর করা বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে একটি প্রয়োজনীয় ধাপ। চুক্তিপত্র ছাড়া কোন চাকুরি করলে নিয়োগকর্তা আপনার সাথে নিয়মের বাহিরে কাজ করাতে চাইলে কোন আইননুগ ব্যবস্থা নেয়া যায় না বিধায় যেকোনো চাকুরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে চুক্তিপত্র বুঝে নিয়ে স্বাক্ষর করা খুবই জরুরি। আপনি যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে চাকুরির আবেদন করেছেন তারাই আপনাকে চাকুরির চুক্তিপত্র হাতে পাবার ব্যবস্থা করে দেবে। তবে আপনি যদি কোন বন্ধু বা পরিচিত কেউ বা আত্মীয়ের মাধ্যমে চাকুরির ব্যবস্থা করে থাকেন তাহলে সে ব্যক্তির কাছ থেকে চুক্তিপত্র হাতে পাবেন।
ভিসা পেপারের মত চুক্তিপত্রও চেকিং (চুক্তিপত্র সঠিক কিনা তা যাচাই) করতে হয় ও সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস দ্বারা সত্যায়িত করতে হয়। আপনি যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে চাকুরি পাবেন তারাই আপনাকে চুক্তিপত্র সত্যায়িত করার ব্যবস্থা করে দেবে। ঢাকায় অবস্থিত জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিসের ওয়ানস্টপ সার্ভিস ডেস্ক থেকে চুক্তিপত্র চেকিং-এর সেবা বিনা খরচে দেয়া হয়। এছাড়া এ সেবা পাবার জন্য ‘বায়রা’ (বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি) অফিসেও যোগাযোগ করতে পারেন।
  • ব্যাংক একাউন্ট খুলুন
দেশে বৈধভাবে টাকা পাঠানোর এবং অর্জিত টাকা সঠিকভাবে সঞ্চয় করার জন্য কর্মজীবি হিসেবে দেশ ছাড়ার আগে আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি দুটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন। একটি একাউন্ট যৌথ নামে অর্থাৎ আপনি এবং আপনার পরিবারের বিশ্বস্ত সদস্যের নামে। এ যৌথ একাউন্টে আপনি শুধু আপনার পরিবারের লালন-পালনের খরচ বা তার থেকে সামান্য বেশি অর্থটুকুই পাঠাবেন। আর একটি একাউন্ট খুলবেন নিজের নামে। আপনি বিদেশে কাজ করে উপার্জিত অর্থ থেকে আপনার পরিবার পরিচালনা ব্যয় প্রেরণের পর ও বিদেশে আপনার জীবনের ব্যয়ভার পরিচালনার পর যদি আপনার কাছে কোন বাড়তি অর্থ থাকে তাহলে সেটা আপনি আপনার নিজের নামে একাউন্টে পাঠিয়ে দেবেন। এখানে বলে রাখা ভাল যে একক একাউন্ট-এর কথা আপনি পরিবারের কাছে গোপন রাখবেন।
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
কর্মজীবি হিসেবে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে বৈধ ভিসা পাবার জন্য কাজের দেশের দূতাবাস দ্বারা নির্ধরিত মেডিকেল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা মেডিকেল টেস্ট করে নেয়া একটি জরুরি ধাপ ও এটি একটি বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া। কর্মী হিসেবে বিদেশে যেতে হলে ভিসা ও চুক্তিপত্র পাবার জন্য অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফলের কাগজ জমা করতে হয়। উল্লেখ্য যে, বিদেশ গমন প্রস্তুতি শেষে পাসপোর্ট, ভিসা ও চাকুরির চুক্তিপত্র হাতে পাওয়ার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। নিয়োগকারী দেশ অর্থাৎ আপনি যে দেশে কাজ করতে যাচ্ছেন সে দেশের স্ব-স্ব দূতাবাস কর্তৃক নির্ধারিত মেডিকেল সেন্টারের মাধ্যমে মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া আপনি আপনার স্থানীয় এলাকার থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ফলাফল সনদ সংগ্রহ করতে পারেন।
মেডিকেল সেন্টারে কুপন দেখিয়ে টাকা জমা করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। পরীক্ষার ফলাফল কবে, কখন হাতে পাবন তা মেডিকেল সেন্টার থেকে জেনে নেবেন। আপনি যে দেশে কাজ করতে যাচ্ছেন সে দেশের দূতাবাসের গেটে গিয়ে কাজের ভিসা ও চুক্তিপত্র দেখিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কুপন সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সাধারণত বিদেশ গমনেচ্ছুদের কুপন সংগ্রহ করাসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে ২,১০০/- টাকা খরচ হয়। তবে এ খরচ বিদেশ গমনের জন্য নির্ধারিত ২০,০০০/- টাকা-এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত।
স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যে বিষয়গুলো দেখা হয়:
• সাধারণ শারীরিক পরীক্ষা;
• মলমূত্র পরীক্ষা;
• এক্স-রে পরীক্ষা;
• রক্ত পরীক্ষা : এইচএসবিএসজি, হেপাটাইটিস ‘এ’ ও ‘বি’, ভিডিআরএল (যৌনরোগ/সংক্রমন পরীক্ষা), এইচআইভি (এইডস-এর পরীক্ষা), টিউবারকিউলোসিস (যক্ষ্মার পরীক্ষা), ম্যালেরিয়া, লেপ্রোসি, মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভবতী কিনা ইত্যাদি বিষয়ের পরীক্ষা করা হয়।
এ বিষয়ে আরও জানতে বিস্তারিত জানুন বাটনে ক্লিক করুন।
  • বিএমইটি’র ব্রিফিং-এ অংশগ্রহণ করুন
কর্মজীবি হিসেবে বিদেশ গমনের আগে ঢাকায় অবস্থিত জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিসে পরিচালিত ব্রিফিং সেশনে অংশগ্রহণ করা অবশ্য করণীয় কাজের মধ্যে একটি। এ ব্রিফিং সম্পন্ন না করলে বিএমইটি থেকে স্মার্ট কার্ড বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড দেয়া হয় না। বিএমইটি অফিসে এক্সটেনশন বিল্ডিং-এ দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ব্রিফিং সেন্টারে প্রতিদিন (ছুটির দিন ছাড়া) ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিং শেষে ব্রিফিং রুম থেকে আপনার পাসপোর্টে ব্রিফিং সম্পন্ন হয়েছে মর্মে একটি সিল দেবে। স্মার্ট কার্ড তোলার সময় ব্রিফিং সিল সম্বলিত আপনার পাসপোর্টটি প্রয়োজন হবে।
বিএমইটি ব্রিফিং এর জন্য যেখানে যেতে হবে:
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি অফিস
এক্সটেনশন বিল্ডিং (দ্বিতীয় তলা)
৮৯/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০
স্মার্ট কার্ড বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড করুন
কর্মজীবি হয়ে বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে আপনাকে বাধ্যতামূলকভাবে বিএমইটি থেকে বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হবে। আপনি যে বাংলাদেশ থেকে কর্মী হিসেবে অন্য দেশে যাচ্ছেন তার আনুষ্ঠানিক সরকারি স্বীকৃতি হল এ বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড। এটি এক ধরনের কম্পিউটার চিপ সংযুক্ত কার্ড। এতে একজন কর্মী হিসেবে আপনার যাবতীয় তথ্য যেমন: আপনার পাসপোর্টের তথ্য, আপনার আঙ্গুলের ছাপ, আপনি যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন তাদের লাইসেন্স নম্বর ইত্যাদি দেয়া থাকে। স্মার্ট কার্ড তৈরি করতে হলে আপনাকে কী করতে হবে, কোথায় যেতে হবে, এবং কার সাথে যোগাযোগ করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে আরও জানতে বিস্তারিত জানুন বাটনে ক্লিক করুন। এছাড়া স্মার্ট কার্ড হাতে পাবার ক্ষেত্রে দুটি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের নমুনা সম্বলিত লিংক নিম্নে দেয়া হল:
নমুনা অঙ্গীকারপত্র : এ লিংকে ক্লিক করলে একটি নমুনা অঙ্গীকারপত্র আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড হবে। এতে আপনার সব তথ্য কম্পোজ করে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে প্রিন্ট নেয়ার পর, স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা করতে পারেন।
নমুনা অনাপত্তিপত্র : এ লিংকে ক্লিক করলে একটি নমুনা অনাপত্তিপত্র আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড হবে। এতে আপনার সব তথ্য কম্পোজ করে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে প্রিন্ট নেয়ার পর, স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা করতে পারেন।
নমুনা দরখাস্ত (স্মার্ট কার্ডে ভুল সংশোধনের জন্য) : এ লিংকে ক্লিক করলে একটি নমুনা দরখাস্ত আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড হবে। এতে আপনার সব তথ্য কম্পোজ শেষে প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা করতে পারেন।
  • ব্যাগগুলো গুছিয়ে নিন
কর্মজীবি হিসেবে বিদেশ গমনের আগে আপনার ব্যাগগুলো গুছিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম আছে যা আইনগতভাবে মেনে চলতে হয়, মেন: আপনার ব্যাগে নিম্নলিখিত জিনিসগুলো নেয়া যাবে না :
 ব্লেড, ছুরি, কাঁচি বা যে কোনো ধরনের ধারালো জিনিস;
 আগুন ধরে এমন জিনিস যেমন: লাইটার বা দিয়াশলাই;
 নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য যেমন: গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও মদের বোতল ইত্যাদি;
 মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, পোল্ট্রি জাতীয় বা রান্না করা খাবার যা অল্প সময়ের মধ্যে পচনশীল;
 দুর্গন্ধ বের হয় এমন পদার্থ।
ব্যাগের সংখ্যা : বিদেশ গমনকালে আপনি দুটি ব্যাগ বহন করতে পারবেন। যেমন : প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বহনের জন্য হাত ব্যাগ ও জামা-কাপড় বহন করার জন্য বড় ব্যাগ। উল্লেখ্য যে হাত ব্যাগ ও বড় ব্যাগকে যথাক্রমে ক্যারি অন ব্যাগ ও চেক ইন ব্যাগ বলা হয়।
ব্যাগের ওজন : আপনার বহনকৃত ব্যাগুলোর ওজন হতে হবে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে। যেমন : একজন যাত্রীর বহনকৃত হাত ব্যাগের ওজন হবে ৭ কেজি, বড় ব্যাগের ওজন হবে ২০ কেজি।
ব্যাগে নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা : আপনি যে সময়ের জন্য বিদেশে অবস্থান করবেন সে অনুযায়ী ও প্রয়োজন বিবেচনা করে আপনার ব্যক্তিগত জরুরি জিনিসগুলোর একটা তালিকা করে নেবেন।
  • বিমান ভ্রমণের সময় করণীয় জেনে নিন
প্রথমবার বিদেশ গমনকারী যাত্রী হিসেবে বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে জেনে নেয়া আপনার জন্য দরকারি একটি বিষয়। বিমান ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সংক্ষেপে নিম্নে উল্লেখ করা হল :
 বোর্ডিং পাসে লেখা সিট নম্বরটি দেখে বিমানে আপনার আসন বা সিট খুঁজে নিয়ে বসুন এবং বিমান উড্ডয়নের সময় আপনার সিটের বেল্টটি বেঁধে নিন।
 বিমানের ভিতরে ধূমপান করা, মোবাইল ফোনে কথা বলা ও রেডিও শোনা সম্পূর্ণ নিষেধ, তাই এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
 আপনার বিমানযাত্রার পরিবেশনকৃত খাবারের মূল্য টিকিটের মূল্যের অন্তর্ভূক্ত থাকায় এ খাবারের কোন মূল্য দিতে হয় না। তবে এর অতিরিক্ত চিপস, চকলেট, কোমল পানীয় বা খাবার পানির বোতল ইত্যাদির জন্য আপনাকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবে।
 বিমানের ভেতর টয়লেট ব্যবহারের নিয়ম বিমানের সেবাদানকারী ব্যক্তির কাছে জেনে নিন।
বিমানের সেবাদানকারী ব্যক্তির সহায়তায় নিজ-এম্বারকেশন কার্ড ও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স ফর্ম পূরণ করে নিন, বিমান ভ্রমণে প্রয়োজনীয় সাধারণ কথাবার্তার ইংরেজি সংলাপগুলোর তালিকা- এ তালিকায় ইংরেজি সংলাপগুলো অর্থসহ বাংলা উচ্চারণে লেখা হয়েছে। সংলাপগুলো অনুশীলনের মাধ্যমে আপনাকে আয়ত্তে আনতে হবে।
 আপনার বিমানযাত্রায় ট্রানজিট বা যাত্রা বিরতি থাকলে আপনাকে ট্রানজিট দেশের এয়ারপোর্টে নামতে হবে। ট্রানজিট সাধারণত সর্বনিম্ম এক ঘণ্টা থেকে একদিন হতে পারে।
  • বিদেশের এয়াপোর্ট অনুষ্ঠানিকতা কী হবে তা জেনে নিন
কাজের দেশের এয়ারপোর্টে অবতরণ করে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সঠিকভাবে সম্পন্ন করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে কিছু বিষয় জানতে হবে। বিদেশে বিমান বন্দরের আনুষ্ঠানিকতাগুলো নিম্নে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল :
 বিমান থেকে নেমে বোর্ডিং ব্রিজ পার হয়ে ইমিগ্রেশন ডেস্কে গিয়ে আপনার পাসপোর্টটি, ভিসা এডভাইস পেপার, চাকুরির চুক্তিপত্র ও টিকিট দেখিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে নিন।
 কনভেয়ার বেল্ট (এ বেল্টের মাধ্যমে মালামাল প্লেন থেকে নামানো হয়) থেকে আপনার নিজের ব্যাগটি সংগ্রহ করুন। এক্ষেত্রে আপনার টিকিটে উল্লেখিত এয়ালাইন্সের ফ্লাইট নম্বর দেখে সে অনুযায়ী কনভেয়ার বেল্ট খুঁজে নেবেন।
 ব্যাগ হারিয়ে গেলে বা খুঁজে না পাওয়া গেলে এয়ারপোর্টের “লস্ট এন্ড ফাউন্ড” ডেস্কে (যে ডেস্ক থেকে যাত্রীদের মালামাল হারিয়ে গেলে তা খুঁজে দেয়া হয়) গিয়ে আপনার ব্যাগ হারিয়ে গেছে মর্মে অভিযোগ দাখিল করুন।
 ব্যাগ সংগ্রহের পর কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স ও সিকিউরিটি চেকিং করুন।
 সবশেষে বিমান বন্দরের বাহিরে অপেক্ষারত গৃহমালিককে খুঁজে নিন। এক্ষেত্রে আপনাকে চিনে নেবার জন্য আপনার নাম ধরে ডাকা হতে পারে অথবা আপনার নাম লেখা প্লেকার্ড দেখাতে পারে।
এ ধাপগুলোর সম্পর্কে আরও জানতে বিস্তারিত জানুন বাটনে ক্লিক করুন।
বিদেশের বিমান বন্দরের ধাপগুলো সম্পর্কে ছবি দেখে বুঝে নিন : এ লিংকে ক্লিক করলে বিদেশে বিমান বন্দর পার হবার ধাপগুলো ছবির সাহায্যে দেখতে পাবেন। বিদেশের বিমান বন্দরে নেমে সকল আনুষ্ঠানিকতাগুলো কীভাবে পর্যায়ক্রমিক ধাপ অনুসারে সম্পন্ন করতে হয় তা ভালভাবে বোঝার জন্য এখানে একটি ছকের মাধ্যমে কতগুলো ছবি দিয়ে দেখানো হয়েছে। আপনি বিদেশ গমনের আগে এ ছকটি প্রিন্ট করে নিতে পারেন।
  • বিদেশের নিয়ম-কানুন কেমন জেনে নিন
বিদেশে অর্থাৎ যে দেশে আপনি কাজের জন্য গিয়েছেন, সে দেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে সেগুলো হল :
 সে দেশের সাধারণ আই-কানুন;
 সে দেশের সামাজিক আচার-আচরণ;
 সে দেশের রাস্তা চলাচলের নিয়ম;
 সে দেশের আবহাওয়া;
 সে দেশের খাদ্যাভ্যাস;
 সে দেশের বিপদে পড়লে সাহায্য চাইবার জন্য জরুরি ফোন নম্বর;
 সে দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করার উপায়;
 বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে আপনার প্রাপ্য সকল সুবিধা ও অধিকার;
 যে শহরে আছেন সে শহরের যাতায়াত ব্যবস্থা;
 আপনার বসবাসের স্থান ও কাজের স্থান সম্পর্কে তথ্য;
 নিকটবর্তি গ্রসারি বা মুদির দোকান, বাজার, পোস্ট অফিস, টেলিফোন বুথ ইত্যাদির অবস্থান;
 সে দেশে অবস্থানরত আপনার চেনা-জানা স্বদেশি বন্ধু-আত্মীয়ের ঠিকানা ও ফোন নম্বর।
এ বিষয়গুলোতে দেশভিত্তিক ভিন্নতা রয়েছে।
বিদেশ গমনের পর কাজে যোগ দেয়ার আগে করণীয়গুলো নিম্নে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল:
 আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন সেখানে আপনার নিয়োগকর্তার সাথে ভালভাবে পরিচিত হয়ে নিন।
 বিদেশের শ্রম অফিস বা অভিবাসন ডিপার্টমেন্ট থেকে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করে নিন। তবে গৃহকর্মী ও সেবাকর্মী পেশায় কাজ করতে গেলে আপনার গৃহমালিক নিজেই আপনার ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে দেবে।
 কাজে যোগদানের আগে যদি নিয়োগকর্তা বা গৃহমালিকের কাছে ওয়ার্ক পারমিট সিল সম্বলিত পাসপোর্ট দিয়ে দিতে হয় তাহলে অবশ্যই তার ফটোকপি নিজের কাছে রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নেবেন।
বিদেশ গমনের পর কাজে যোগ দেয়ার পরে করণীয়গুলো নিম্নে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল:
 কাজে যোগদানের পর আপনি যে জায়গায় কাজ করছেন সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নিন।
 কর্মস্থলে আপনার পদমর্যাদা ও নামঠিকানা, কর্মস্থলের নামঠিকানা, নিয়োগকারীর স্বাক্ষরসহ একটি পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে নিন।
 র সকল সুবিধা ও শর্তাদি আপনার চুক্তিপত্র অনুযায়ী সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নিন।
  • দূতাবাস এবং শ্রম উইং-এর সাথে যোগাযোগ ও সেখান থেকে প্রাপ্ত সুবিধা ও অধিকার জেনে নিন
বিদেশে কাজ করার ক্ষেত্রে কর্মজীবি হিসেবে কাজের দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস ও সেখানকার শ্রম উইং থেকে আপনার প্রাপ্ত সুবিধা ও অধিকারগুলো জেনে নেয়া জরুরি নিম্নে এগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল :
 নারীকর্মী হিসেবে আপনি যে দেশের যে শহরে কাজ করতে গেছেন সেখানে আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস অফিসে ফোন করে আপনার কর্মস্থল সম্পর্কে জানাবেন। বিএমইটি ব্রিফিং পর্বে পাওয়া ছোট তথ্যবইগুলোতে দেশ ও শহরের নাম অনুযায়ী বাংলাদেশি দূতাবাসের ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেয়া থাকে। এ বইটি সবসময় আপনা কাছে রাখবেন।
 এছাড়া জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বা বিএমইটি অফিসের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগকারী বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রম উইং-এর যোগাযোগের ঠিকানা ও ফোন নম্বর পাওয়া যাবে। লিংকটি হল : http:/www.bmet.org.bd/BMET/labourWingsAction
 এছাড়া আপনি যে এলাকায় কাজ করছেন সেখানে কাছাকাছি আপনার কোন পরিচিত বন্ধু বা আত্মীয় থাকলে তাদের সাথে সবসময় ফোনে যোগাযোগ করবেন।
  • আইনি সহযোগিতা কোথায় পাবেন জেনে নিন
 বিদেশে কর্মী হিসেবে প্রয়োজনে আইনি সহযোগিতা পেতে হলে আপনাকে সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রমউইং-এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে কর্মীদের আইনি সহযোগিতা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে;
 কর্মী হিসেবে বেতন না পাওয়া, চুক্তিতে লিখিত বেতনের চেয়ে কম বেতন দেয়া, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়া, অশালীন ভাষায় কথা বলা, যৌন হয়রানির শিকার হওয়াসহ মালিকের সাথে যে কোন ধরনের সমস্যা হলে সে বিষয়ে দূতাবাসে লিখিত আবেদন করতে পারবেন;
 অভিযোগ দাখিলের আবেদনপত্র দূতাবাসের শ্রমউইং-এ পাওয়া যায়। দূতাবাসের নিয়োগকর্তার সাথে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে পারবেন;
 তারপরেও যদি সমস্যা সমাধান না হয় তাহলে শ্রম দপ্তর, শ্রম আদালতে যেতে, সেখানে আবেদন পেশ করে শুনানির জন্য এবং বিচার পাওয়ার জন্য দূতাবাসের থেকে আইন সহায়তাকারী এবং অনুবাদক বা দোভাষীর সহায়তা চাইতে পারেন;
 এ লিংকটিতে ক্লিক করলে http://www.bmet.org.bd.BMET/labourWingsAction বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগকারী বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রমউইং-এর যোগাযোগের ঠিকানা ও ফোন নম্বর পাওয়া যাবে।
 অভিযোগ দাখিলের আবেদনপত্র দূতাবাসের শ্রমউইং-এ পাওয়া যায়। দূতাবাসের নিয়োগকর্তার সাথে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে পারবেন। বিএমইটি’র ওয়েবসাইটে অন-লাইনের মাধ্যমে অভিযোগ দাখিলের ব্যবস্থা রয়েছে এ লিংকটি হলhttp:/www.ovijogbmet.org/
  • প্রবাসী কল্যাণ তহবিল থেকে প্রাপ্ত সুবিধাদি জেনে নিন
বিদেশে কর্মজীবি হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ তহবিল বা ওয়েজয়ার্নার্স ফান্ড থেকে আপনার প্রাপ্য সুবিধাগুলো হলে:
 বৈধভাবে কর্মজীবি হয়ে বিদেশে কর্মরত অবস্থায় মৃত ব্যক্তির লাশ দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস সহায়তা করে থাকে। প্রবাসী কল্যাণ তহবিল দাফন খরচ বাবদ ৩৫,০০০ (পঁয়ত্রিশ হাজার) টাকা আর্থিক সাহায্য দেয়;
 বৈধভাবে কর্মজীবি হয়ে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মী সে দেশে মৃত্যুবরণ করলে এবং নিয়োগকর্তা হতে কোন ক্ষতিপূরণ না পেলে জনশক্তি ব্যুরোর কল্যাণ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকার অনুদান মৃতের উত্তরাধিকারীদেরকে প্রদান করা হয়;
 বৈধভাবে কর্মজীবি হয়ে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীর মৃত্যু হলে, নিয়োগকর্তা দ্বারা মৃতদেহ দেশে প্রেরণ করা সম্ভব না হলে কল্যাণ তহবিলের অর্থায়নে বিদেশে মৃত কর্মীদের লাশ ফেরত আনা হয়;
 বৈধভাবে কর্মজীবি হয়ে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি মৃত কর্মীদের নিয়োগকর্তার নিকট থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয় ও সে ক্ষতিপূরণের টাকা মৃতের বৈধ উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়;
 বিদেশে অর্থকষ্টে পড়া এবং অসুস্থ অবস্থায় ফেরত আসা কর্মীদের চিকিৎসা বাবদ প্রসামী কল্যাণ তহবিল থেকে বিশেষ বিবেচনায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়;
  • কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সতর্কতাগুলো
নিয়োগকর্তা বা গৃহমালিকের কাছে পাসপোর্ট হস্তান্তর করলে অবশ্যই আপনার নিজের কাছে এক সেট ফপোকপি আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নেবেন।
 চাকুরিতে যোগদেবার সময় নিয়োগকর্তার বা গৃহমালিকের কাছ থেকে আপনার ওয়ার্ক পারমিট বা আকামা ও পরিচয়পত্র হাতে নেবার সময় কোনভাবেই কোন সাদা কাগজে স্বাক্ষর বা টিপসই দেবেন না। এক্ষেত্রে কোন ধরণের অনুরোধ বা চাপের গুরুত্বব দেবেন না।
 বিদেশে পৌঁছে কাজ শুরু করার পরে বা আগে বিদেশস্থ নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা অন্য কেউ যে কিনা নারী পাচারকারী দলের সাথে সংযুক্ত, আপনাকে বেশি বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে অন্য কোথাও চাকুরির প্রস্তাব দিতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অর্থাৎ চাকুরি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা না করে দূতাবাসের মাধ্যমে নতুন নিয়োগকর্তার সম্পর্কে খোঁজ না নিয়ে কোনভাবেই কোন নতুন সিদ্ধান্ত নিবেন না। এ চেষ্টায় অনেক সময় বৈধ শ্রমিকও বিদেশে অবৈধ হয়ে পরে। যার পরিণতিতে তারা জেল-জরিমানার কবলে পরে অনেক ক্ষেত্রে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া পাচারকারী দলের সদস্যরা বেশি বেতন দেয় এমন চাকুরির লোভ দেখিয়ে আপনাকে নিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত করতে পারে। তাই এসব বিপদ থেকে এড়িয়ে চলার জন্য আপনার কর্মস্থলের পার্শ্ববর্তি এলাকায় অপরিচিত লোকের সাথে সহজে মেলা-মেশা করবেন না।
 সংযুক্তি আরব আমিরাত ও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোতে চরম ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করে তাই এসব দেশে কাজ করতে গেলে সুস্থ থাকার জন্য আপনি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ও সুষম খাবার খাবেন। এবং যে সময়টুকু কাজ করবেন না সে সময়টুকু বিশ্রাম নেবে।
 মনে রাখবেন সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। আপনি যে রুমে থাকবেন সে রুমটি বাথরুমসহ সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখবেন।
 গৃহকর্মী বা কেয়ারগিভার পেশায় গেলে আহার ও বাসস্থানেরমত আপনার চিকিৎসা সেবাও বিনা খরচে হয়ে থাকে তাই কোন কারণে অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত গৃহমালিককে জানাবেন। এবং এ ব্যাপারে সবসময় সতর্ক থাকবেন।
 বিদেশে কাজ করতে গিয়ে আপনাকে কিছু মারাত্মক রোগ যেমন: এইডস, হেপাটাইটিস, যৌন সংক্রমিত রোগ ইত্যাদি সম্পর্কে সচেতন থাকবেন।
 গৃহের ভিতরে আপনি অনেক ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নের, মৌখিকভাবে অশালীন মন্তব্যের শিকার বা যৌন হয়রানির শিকার হতে পারেন। এক্ষেত্রে ভয় না পেয়ে দ্রুত দূতাবাসের শ্রমউইং-এ অভিযোগ করবেন।
 গৃহকর্মী বা কেয়ারগিভার পেশায় বা গার্মেন্টস কর্মী বা ক্যাশিয়ারের কাজ করতে গেলে সময়মত বেতন হাতে না পাওয়া বা দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়া এধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন সে ক্ষেত্রে কোন ধরনের ভয় বা কুণ্ঠাবোধ না করে অবশ্যই দ্রুত দূতাবাসের শ্রম উইং-এ অভিযোগ করবেন।
 মনে রাখবেন একজন নারীকর্মী হিসেবে কাজ করলেও আপনার অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা কোনদিক থেকেই একজন পুরুষকর্মী থেকে কম নয় এবং আইনগতভাবে আপনি সকল ধরনের সহায়তা দূতাবাস ও তাদের শ্রম উইং থেকে পাবেন।
 তাই নারীকর্মী হিসেবে নিজের মনোবল শক্ত রাখবেন ও আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতে ভুলবেন না।
 আপনি দুর্বল এটা কাউকে বুঝতে দেবেন না যাতে কেউ যেন আপনার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আপনার কোন ক্ষতি করতে না পারে।
  • গৃহকর্মী পেশায় কাজের ক্ষেত্রে আপনার আচরণ কেমন হবে জেনে নিন
কর্মস্থলে আপনার পেশাগত আচরণ কেমন হবে তা বিভিন্ন পেশা অনুসারে নিম্নে বর্ণনা করা হল:
 গৃহমালিকের আদেশ-নির্দেশ সঠিকভাবে বুঝে নিন;
 কোন সমস্যায় পড়লে সেটা গোপন না করে সরাসরি গৃহমালিককে বুঝিয়ে বলুন;
 ধৈর্য ধারণ করে, ভদ্র হয়ে বিনয়ের কথা বলুন;
 মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে দ্রুত বিশ্বস্ততা অর্জন করুন;
 কারও সাথে চিৎকার করে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন;
 কারও প্রতি আঙ্গুল নির্দেশ করা থেকে বিরত থাকুন;
 সবার সাথে স্যার-ম্যাডাম বলে সম্বোধন করুন;
 সবসময় হাসি-খুশি থাকুন;
 কারও ঘরে প্রবেশ করার আগে অনুমতি নিন;
 টেলিফোন ও মোবাইলে স্যার বা ম্যাডাম সম্বোধন করে সংক্ষেপে কথা বলুন;
 শিশুদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করুন;
 পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে সুসম্পর্ক ও পারস্পারিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলুন;
 হাই তোলার সময় মুখে হাত দিন।
বিশেষ করে লক্ষ্য রাখতে হবে
 ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা খুবই জরুরি;
 বাড়ীর জন্য মনখারাপ হলে কান্নাকাটি করা যাবে না;
 প্রয়োজনে বাথরুমে গিয়ে কেঁদে হালকা হতে হবে;
 রান্নার সময় চুল বেঁধে রাখতে হবে ও এপ্রোন পড়তে হবে;
 পান খাওয়া যাবে না;
 মাথায় তেল দেয়া এবং ঠোটে লিপস্টিক দেয়া যাবে না;
 কাজ শেষে প্রত্যেকটি যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করে রাখতে হবে;
 কোন কিছু চুরি করা যাবে না;
 কাপড় ধোয়ার সময় সাদা ও রঙিন কাপড় আলাদাভাবে ধুতে হবে;
 কাজসমূহের প্রাধান্য নির্ধারণ করে প্রত্যেক দিনের কাজের তালিকা সম্পন্ন করার সময়সহ তৈরি করুন। সময়মত কাজগুলো শেষ করার চেষ্টা করুন;
 একজন সেবাকর্মী হিসেবে আপনার রোগী বা সেবাগ্রহীতার যেকোন জরুরি অবস্থার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলসহ প্রস্তুত থাকুন;
 ফার্ষ্ট এইড সেবা পদ্ধতি সবসময় মনে রাখুন ও দায়িত্ব পালনকালে হাতের কাছে সবসময় ফার্ষ্ট এইড বই ও কিট রাখবেন;
 সবসময় সেবাগ্রহীতার পছন্দ-অপছন্দের প্রাধান্য দিন;
 ধৈর্য ধরে খুব শান্তভাবে সবসময় সেবাগ্রহতিার নির্দেশ শুনুন;
সুত্রঃ
Like us on Facebook
Follow us on Twitter
Recommend us on Google Plus
Subscribe me on RSS